ঢাকার প্রত্যেকটা মসজিদে এসি অথচ ফুটপাতে অসংখ্য অভুক্ত বনী আদম

ঢাকার প্রায় প্রত্যেকটা মসজিদে এসি, ফ্লোরে দামী মারভেল পাথর। অথচ ফুটপাতে অসংখ্য বনী আদম অভুক্ত, বস্ত্রহীন। এর জন্য দায়ী এই শহরের পেশাদার ইমাম শ্রেণি।

এরা বেছে বেছে মসজিদে দান-সদকা বিষয়ক হাদিস শুনায়, আর মুসল্লিদের বলে মসজিদে দান করতে। এমনকি সরকারি মসজিদগুলিতেও টাকা তোলা হয় পাবলিকের কাছ থেকে। মসজিদ কমিটি ইমাম নিয়োগ দেয়ার সময় খেয়াল করে ইমাম টাকা সংগ্রহ করতে পটু কিনা।

আল্লাহ সুরা সফে বলেছেন, নিজে যে কাজ কর না, তা অন্যকে করতে বলো না, অধিকাংশ ইমাম এই আয়াতের উল্টাটা করে, নিজে কখনো দান করে না, পাবলিকরে বলে দান করতে। আমি কদাচিৎ দেখেছি কোনো মসজিদের ইমাম সেই মসজিদে দান করেছে, আপনি দেখেছেন কাউকে? পাবলিকের সেন্টিমেন্টটাই এরা চেঞ্জ করে ফেলেছে। পাবলিক ৫০০ টাকা দান করলে ৪৯৯ টাকা করে মসজিদে, ১ টাকা দেয় মসজিদের সামনে দাঁড়ানো ভিক্ষুককে। অথচ হওযার কথা ছিল উল্টোটা।
ইমামদের এই ভূমিকার কারণ কি? কারণ সহজ, মসজিদের ফান্ড বাড়লে তাদের বেতনও বাড়বে। তারা মসজিদে পেশাদার ইমাম। কে ফুটপাতে থাকল, কে ল্যাংটা থাকল সেটা তাদের দেখার বিষয় না।

আপনি যদি জরিপ করেন, দেখবেন মসজিদের দানের শতকরা ৯০ টাকা হচ্ছে অবৈধ রোজগারের টাকা, ঘুষখোর বা দুর্নীতিবাজদের টাকা। এরা দান করে রাতে ভালোমত ঘুমানোর জন্য। সকালে ৫ লাখ ঘুষ খেয়ে এশার নামাজে মসজিদে ৫০ হাজার দান করে মনের খুতখুতানি দূর করার জন্য। ইমাম নিজেও জানে, এই টাকা ঘুষের টাকা, তবু জোরেসোরে আলহামদুলিল্লাহ বলে। এইসব অবৈধ রোজগারের টাকায় ইমামের বেতন বাড়ে, ইমাম তাই মনের ভুলেও জুমার খুতবায় ঘুষের বিরুদ্ধে হাদিস শুনায় না।

“আপনি যা খাবেন, আপনার চরিত্রে তার প্রভাব পড়বে।” you eat junk food, you behave junky. এটা স্বতসিদ্ধ। এর বাস্তব দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের এইসব ইমামরা। এদের রিযিক হালাল না, তাই এদের চরিত্রে মোসাহেবি স্বভাব বিদ্যমান। এরা কথা বলে বিলাইর মত মিউ মিউ করে। কারো বিরুদ্ধে না যায় এমন কোনো টপিক নিয়ে আসে জুমার খুতবায়। দেখেন না রাজনৈতিক নেতারা তাদের দাঁড়া করিয়ে মিম্বারে বসে থাকে।

চেতিয়েন না, কড়া কথা বললাম। কাউকে না কাউকে তো বলতেই হবে। আমিই না হয় বললাম। তবে হা, সব ইমাম এরকম না, ব্যতিক্রম আছেন। কিন্তু তাদের সংখ্যা এত কম যে হাতের কড়ে গোনা যায়। দুঃখটা এখানে।

আমার সাথে ইমামদের জমি-জমার ক্যাচাল নাই। আমি নিজেই পার্টটাইম ইমামতি করেছি নানা জায়গায়। আমার বাবাও মসজিদের ইমাম, খতিব, তবে পেশাজীবী না। ৩০ বছরের অধিক সে বিনা টাকায় ইমামতি করেন। নিজেই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। এ কারণে কথা বলার সময় মোসাহেবি করা লাগে না তার।

আরবি শব্দ ইমাম মানে হল নেতা, লিডার। লিডার কথা বলবে সিংহের মত, বিড়ালের মত মিউ মিউ করে না। সিংহ কখন মিউ মিউ করে জানেন?
যখন সে বিড়ালের মত ছানাভাত বা উচ্ছিস্ট খায় তখন। যে যা খাবে তার চরিত্রে তার প্রভাব পড়বেই পড়বে।ঢাকার প্রত্যেকটা মসজিদে এসি অথচ ফুটপাতে অসংখ্য অভুক্ত বনী আদম